Saturday, August 2, 2025

পরিবর্তন হচ্ছে যে ৪০ সংসদীয় আসনের সীমানা

আরও পড়ুন

জাতীয় সংসদের ৪০টি আসনের সীমানায় রদবদল এনে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কুমিল্লা, সিলেট, সিরাজগঞ্জসহ ১৪টি জেলায় এসব আসন অবস্থিত। খসড়া তালিকায় গাজীপুরে একটি আসন বেড়ে ছয়টি হয়েছে। আর বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে। কঠোর গোপনীয়তায় তৈরি করা এ খসড়ায় বেশকিছু আসনের উপজেলার প্রশাসনিক এলাকার অখণ্ডতা রক্ষা করেনি ইসি। বাকি ৫০টি জেলার ২৬০টি আসনের আগের সীমানা বহাল রাখা হয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বুধবার এ খসড়া তালিকার গেজেট প্রকাশ করল ইসি। এ তালিকার ওপর ১০ আগস্ট পর্যন্ত অভিযোগ, দাবি ও আপত্তি জানানো যাবে। ওইসব দাবি-আপত্তি শুনানি করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।

যেসব আসনের সীমানায় রদবদল হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- পঞ্চগড়-১ ও ২; রংপুর-৩; সিরাজগঞ্জ-১ ও ২; বাগেরহাট-২ ও ৩; সাতক্ষীরা-৩ ও ৪; শরীয়তপুর-২ ও ৩; ঢাকা-২, ৩, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯; গাজীপুর- ১, ২, ৩, ৫ ও ৬; নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫; সিলেট-১ ও ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩; কুমিল্লা -১, ২, ৯, ১০, ১১; নোয়াখালী-১, ২, ৪ ও ৫; এবং চট্টগ্রাম-৭ ও ৮। ইসি জানিয়েছে, জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, উপজেলা বা থানা ইউনিটকে যতদূর সম্ভব অখণ্ড রাখা, প্রশাসনিক অখণ্ডতাসহ ১২টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে এসব আসনের সীমানায় রদবদল করা হয়েছে। যদিও নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে, এসব আসনে ‘ছোটখাটো’ পরিবর্তন আনা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার ও সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিটির প্রধান মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বুধবার নিজ কার্যালয়ে খসড়া সীমানা তালিকা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার নির্ধারণ করেছি ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০। এটা ধরে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় গাজীপুরে একটি আসন বেড়েছে এবং বাগেরহাটের একটি আসন কমেছে। আর কোনো জেলায় আসন কম-বেশি হয়নি। ৩৯টি আসনে অ্যাডজাস্টমেন্ট রয়েছে।

সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রক্রিয়ার বিষয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের এখতিয়ার ইসির। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণে ইতোমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুলাই সীমানা নির্ধারণে ভূগোলবিদ, নগরবিদ, পরিসংখ্যানবিদসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৯ সদস্যের বিশেষায়িত কারিগরি কমিটি করা হয়।

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এ টিম ৬৪ জেলার ৩০০ আসনের পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করে ৪২টি আসনের সীমানায় পরিবর্তনের প্রস্তাব করে। ইসি ৩৯টি আসনের সীমানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আদমশুমারি ২০২২ ধরে কাজ করতে গিয়ে কারিগরি কমিটি দেখল অসামঞ্জস্য রয়েছে আদমশুমারিতে। বর্তমানে ইসির হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা রয়েছে। সেই ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০ কমবেশি গড় ভিত্তিতে গ্রেডিং করেছে কারিগরি কমিটি।

এ নির্বাচন কমিশনার জানান, সর্বনিম্ন ভোটার সংখ্যা যে জেলায়, সেখানে ফিক্স আপ করেছে। এক, দুই, তিন আসনবিশিষ্ট জেলাগুলোকে আসন বাড়ানো বা কমানোয় বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এছাড়া আড়াইশ আসনের বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি আবেদন না আসায় বিদ্যমান সীমানাই বহাল রাখা হয়েছে।

নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নির্বাচন কমিশন ৩৯টি আসনের সীমানা পরিবর্তনের কথা জানালেও বাস্তবে ৪০টি আসনের সীমানায় রদবদল করা হয়েছে। যেসব আসনের সীমানায় রদবদলের কথা বলা হয়েছে, সেখানে কুমিল্লা -৯ আসনের কথা উল্লেখ নেই।

এর আগে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১২টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করেছিল তৎকালীন কমিশন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ